..............
মাহবুব মোর্শেদ এর অনেক ব্যাপারেই আমার সমালোচনা আছে। তিনি উদ্দেশ্যমূলভাবে অনেক কিছু করেন, কিছু দেখনদারীও আছে তাঁর মধ্যে। এগুলো সবই ব্যক্তিগত বিষয়। তবে কথা হলো, লেখক মাহবুব মোর্শেদকে পছন্দ করি সেই 'ব্যক্তিগত বসন্তদিন' থেকেই।
তিনি গল্প লেখেন। গল্প বানান না। গল্প লেখেন, বলেন এবং তাঁর গল্পে অবশ্যই গল্প থাকে।
এই বইমেলায় প্রকাশিত তাঁর নতুন উপন্যাস 'তোমারে চিনি না আমি' পড়লাম। পড়তে গিয়ে মনে হলো, আরে এই উপন্যাসের পাত্রপাত্রী আমার চেনা নাকি! না, পাত্রপাত্রীকে মোটেই চিনি না, কিন্তু তাদের সঙ্গে আমি একাত্ম হতে পেরেছি, তাদের আমার চেনা মনে হয়েছে, এ উপাখ্যানে এটা কিন্তু মাহবুবেব সাফল্য।
উপন্যাসের নায়ক মফস্বল থেকে আসা, সে উন্মুল, সে দ্বিধাগ্রস্ত। আমরাও তো তাই। উপন্যাসের নায়ক রানা কোথাও দাঁড়াতে পারে না। এক সময় বিপ্লবের স্বপ্ন দেখত, এখন ছা পোষা, কিছু ভালো লাগে না তার। এই প্রবল পণ্যবাদী, ভোগবাদী সমাজে সে একা। সবার মধ্যে থেকেও একা, নিজের সঙ্গে থেকেও একা। আমাদের বাস্তবতাও তাই। ফলে, পড়তে পড়তে কখনো সখোনো মনে হয়েছে, উপন্যাসের নায়ক রানা কি আমার মধ্যে উঁকি দিল।
এখানে সেক্স আছে, বেশ ভালোভাবেই আছে। কিন্তু সেটা এসেছে যথাযথ পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী এবং কখনোই সীমা লঙ্ঘন করে নয়।
সব মিলিয়ে উপন্যাসটি পড়ে শান্তি পেয়েছি। কথা ও কবিতার যুগল স্বাদ আছে এতে। আছে নিটল গল্প; আমদের ভেঙে যাওয়া সমাজ, ছেড়ে আসা ঘরবাড়ি আর জীবনের গল্প।
সেই গল্প পড়ার পর ভাবি, আমরা কি আদতে সেই আমরা? নিজেদের আমরা কতটুকু চিনি?
'তোমারে চিনি না আমি' পড়ুন। উপন্যাসটি আপনাকে স্মৃতিকাতর করবে, ভাবাবেও।
এবারের বইমেলায় বইটি বের করেছে আদর্শ।
বইমেলায় পাওয়া যাবে আদর্শ প্রকাশনীর স্টলে।
No comments:
Post a Comment