বইমেলা শুরু হয়ে গেলে
প্রথমত যেটা হয়, ধুমধাম পছন্দের বই কেনা হয়। তারপর ধীরে ধীরে পড়া হয় সারা
বছর। এছাড়া কোনো বই নিয়ে একটু বেশি আগ্রহ বা ভালোবাসা থাকলে একই সাথে আরো
দশটা বই কেনা হলেও পড়া হয়ে যায় ফেব্রুয়ারিতেই। তবে এমন বই সাধারণত প্রতি
বছর মেলার সময় খুব কম থাকে। এক-দুই থেকে তিনটার বেশি হয় না। আর তাই সারা
বছর ধীরে ধীরে পড়ার জন্য সময় পাওয়া যায়। তো মেলা চলাকালীন বই পড়ে ফেলার মতো
আগ্রহী বই এবার একাধিক আসছে। তার মধ্যে মাহবুব মোর্শেদের দ্বিতীয় উপন্যাস
(এমনিতে তৃতীয়, কিন্তু দ্বিতীয় উপন্যাস হিসেবে যেটা ছিলো ‘অর্ধেক জাগ্রত
রেখে’-কে লেখক নিজে নভেলা বলেন বলে) ‘তোমারে চিনি না আমি’।
আগে থেকেই জানতাম প্রথম সপ্তাহেই আসবে। প্রথম দুই দিন মেলায় গেলেও বই কেনা হয়নি। তৃতীয় দিন গিয়ে বই কিনতে গিয়ে দেখি পকেটে টাকা নাই। সাথে আরো এক বন্ধু থাকায় তার কাছ থেকে ধার নিয়ে বই কেনা হলো। ভাবছিলাম বাসে বসে কিছুটা পড়ে ফেলবো। কিন্তু সে সুযোগ না পাওয়ায় রাতে বাসায় গিয়ে পড়া শুরু হলো। ওই রাতে শেষ হয়নি। শেষ হলো ৩ তারিখ রাতে। এর আগে সাথে যে বন্ধু এই বই কিনেছে, সে ফোন দিলো রাত ৮টা বা সাড়ে ৮টার দিকে। জিজ্ঞাসা করলো বই শেষ করে ফেলেছি কিনা। বললাম, প্রায় শেষ। আজ রাতে শেষ হয়ে যাবে। বললো, তাকে চটি লিখার বুদ্ধি কে দিয়েছে?
আমি রীতিমতো ধাক্কা খেলাম। মানে? এটা চটি কেন? তখন তাকে একটু ফ্ল্যাশব্যাক-এ যেতে বললাম। জিজ্ঞাসা করলাম তার লেখা আগে পড়েছিস? তার লেখা সম্পর্কে কোনো আইডিয়া থাকলে তো তুই এমন মন্তব্য করতি না? তখন সে জানালো লেখকের প্রথম গল্পসংকলনটি ‘ব্যক্তিগত বসন্তদিন’ পড়ছিলো। বললাম ওই বই ঠিকমতো পড়লেও এমন মন্তব্য করার কথা না। যাই হোক, আমি তার সাথে আর তর্কে যাই নি। বলেছি, বই শেষ করি তারপর মন্তব্য।
তিন তারিখ রাতে বই শেষ করার পর আমার ‘ব্যক্তিগত বসন্তদিন’ এর মাহবুব মোর্শেদকেই মনে পড়ছে। ওই গল্প সংকলনের যে গল্প পড়ে আমি মাহবুবের গল্প/গদ্যের ভক্ত হই, সেটার নাম ‘জিসম’। হিন্দি সিনেমার নামে ওই নাম থাকায় সেসময় গল্পটি সমালোচিত হয়েছিলো। আরো সমালোচিত ও আলোচিত হয়েছিলো গল্পের মধ্যে তীব্র যৌনতার প্রসঙ্গ। এখান থেকেই যে মাহবুব আলাদা হয়ে উঠছেন এটা তার সচেতন পাঠকরা খেয়াল করছেন কিনা জানি না, আমি খেয়াল করছি এই গল্পকার এই দিকেই যেতে চাচ্ছেন। পরবর্তীতে তার একটি গল্পগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিলো ‘দেহ’ শিরোনামে। ওই গল্পগুলোর যোগসূত্রও ছিলো শরীর ও যৌনতা। বাংলাদেশের মত সেমি-আধুনিক ও সেমি-ধার্মিক মধ্যবিত্তের জীবনের যৌনতার গল্প। একই রকম চিত্রও মাহবুবের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘তোমারে চিনি না আমি’-তে।
হ্যা, গল্পে যৌনতা থাকায় অনেকে বিরক্ত হতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই উপন্যাস কিন্তু যৌনতার না। এই উপন্যাস ভয়াবহ রকম রাজনৈতিক ও সামাজিক। পাঠককে কেবল সেই সমাজটা মাহবুবের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। তার নির্মিত চরিত্রের মধ্য দিয়ে দেখতে হবে। এই দেখতে পারলেই আপনি মাহবুবকে অন্তরঙ্গভাবে চিনতে পারবেন। না হলে সে আপনার বিরক্তির কারণও হতে পারে। যেমন ভারতের এক সময়কার জনপ্রিয় লেখক খুশবন্ত সিং এর বই পড়ে কেউ আনন্দিত হয়, কেউ হয় বিব্রত ও বিরক্ত। আমি অবশ্য আনন্দের ভাগিদারই হই। তাই আমার কাছে মাহবুব মোর্শেদের বই মানেই আমার কাছে সমাজের আরো একটি নতুন রূপ। আরো একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
চ্যানেল আই অনলাইন
আগে থেকেই জানতাম প্রথম সপ্তাহেই আসবে। প্রথম দুই দিন মেলায় গেলেও বই কেনা হয়নি। তৃতীয় দিন গিয়ে বই কিনতে গিয়ে দেখি পকেটে টাকা নাই। সাথে আরো এক বন্ধু থাকায় তার কাছ থেকে ধার নিয়ে বই কেনা হলো। ভাবছিলাম বাসে বসে কিছুটা পড়ে ফেলবো। কিন্তু সে সুযোগ না পাওয়ায় রাতে বাসায় গিয়ে পড়া শুরু হলো। ওই রাতে শেষ হয়নি। শেষ হলো ৩ তারিখ রাতে। এর আগে সাথে যে বন্ধু এই বই কিনেছে, সে ফোন দিলো রাত ৮টা বা সাড়ে ৮টার দিকে। জিজ্ঞাসা করলো বই শেষ করে ফেলেছি কিনা। বললাম, প্রায় শেষ। আজ রাতে শেষ হয়ে যাবে। বললো, তাকে চটি লিখার বুদ্ধি কে দিয়েছে?
আমি রীতিমতো ধাক্কা খেলাম। মানে? এটা চটি কেন? তখন তাকে একটু ফ্ল্যাশব্যাক-এ যেতে বললাম। জিজ্ঞাসা করলাম তার লেখা আগে পড়েছিস? তার লেখা সম্পর্কে কোনো আইডিয়া থাকলে তো তুই এমন মন্তব্য করতি না? তখন সে জানালো লেখকের প্রথম গল্পসংকলনটি ‘ব্যক্তিগত বসন্তদিন’ পড়ছিলো। বললাম ওই বই ঠিকমতো পড়লেও এমন মন্তব্য করার কথা না। যাই হোক, আমি তার সাথে আর তর্কে যাই নি। বলেছি, বই শেষ করি তারপর মন্তব্য।
তিন তারিখ রাতে বই শেষ করার পর আমার ‘ব্যক্তিগত বসন্তদিন’ এর মাহবুব মোর্শেদকেই মনে পড়ছে। ওই গল্প সংকলনের যে গল্প পড়ে আমি মাহবুবের গল্প/গদ্যের ভক্ত হই, সেটার নাম ‘জিসম’। হিন্দি সিনেমার নামে ওই নাম থাকায় সেসময় গল্পটি সমালোচিত হয়েছিলো। আরো সমালোচিত ও আলোচিত হয়েছিলো গল্পের মধ্যে তীব্র যৌনতার প্রসঙ্গ। এখান থেকেই যে মাহবুব আলাদা হয়ে উঠছেন এটা তার সচেতন পাঠকরা খেয়াল করছেন কিনা জানি না, আমি খেয়াল করছি এই গল্পকার এই দিকেই যেতে চাচ্ছেন। পরবর্তীতে তার একটি গল্পগ্রন্থও প্রকাশিত হয়েছিলো ‘দেহ’ শিরোনামে। ওই গল্পগুলোর যোগসূত্রও ছিলো শরীর ও যৌনতা। বাংলাদেশের মত সেমি-আধুনিক ও সেমি-ধার্মিক মধ্যবিত্তের জীবনের যৌনতার গল্প। একই রকম চিত্রও মাহবুবের দ্বিতীয় উপন্যাস ‘তোমারে চিনি না আমি’-তে।
হ্যা, গল্পে যৌনতা থাকায় অনেকে বিরক্ত হতে পারেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত এই উপন্যাস কিন্তু যৌনতার না। এই উপন্যাস ভয়াবহ রকম রাজনৈতিক ও সামাজিক। পাঠককে কেবল সেই সমাজটা মাহবুবের চোখ দিয়ে দেখতে হবে। তার নির্মিত চরিত্রের মধ্য দিয়ে দেখতে হবে। এই দেখতে পারলেই আপনি মাহবুবকে অন্তরঙ্গভাবে চিনতে পারবেন। না হলে সে আপনার বিরক্তির কারণও হতে পারে। যেমন ভারতের এক সময়কার জনপ্রিয় লেখক খুশবন্ত সিং এর বই পড়ে কেউ আনন্দিত হয়, কেউ হয় বিব্রত ও বিরক্ত। আমি অবশ্য আনন্দের ভাগিদারই হই। তাই আমার কাছে মাহবুব মোর্শেদের বই মানেই আমার কাছে সমাজের আরো একটি নতুন রূপ। আরো একটি নতুন অভিজ্ঞতা।
চ্যানেল আই অনলাইন
No comments:
Post a Comment