Saturday, March 3, 2018

আরিফুজ্জামান তুহিনের চিঠি


‘তোমারে চিনি না আমি’
আমার গল্প, আমাদের গল্প আপনি কি করে জানলেন?
প্রিয় মাহবুব ভাই
সেই কবেকার কথা। তা আঠেরো বছরতো হবেই। মফস্বল শহরের ক্ষয়ে যাওয়া লাল ইটের রাস্তা ছেড়ে আমি একটা ব্যাগ নিয়ে ঈগল নামে ঢাকার একটি পরিবহনে উঠে গেলাম। পস্ট মনে আছে। শীতকাল ছিলো। মাঠে হলুদ শর্ষেফুলের মাতাল করা গন্ধ ছুটছিলো। জানালার পাশে বসে আমার তখন কেবলই মনে হচ্ছিলো, নবগঙ্গার ক্ষীণ ধারায় জলের গভীরে ডুব দিয়ে আমি যে মাছের নড়াচড়া দেখতাম, রায়দের বাগানে অসময় বড় হওয়া কাঠাল চুরি করে খেয়ে সেই কাঠালের ভুতি আবার রায়েদের বাড়িতেই রেখে আসতাম কিম্বা কৃষক সংগঠনের জন্য মাইলের পর মাইল ছুটতাম তা আর হবে না। আমি পুরনো কোন ট্রাঙ্কে নেফথোলিন দিয়ে রাখা মখমলের মত নরম কোন পোশাক, আর যাচ্ছি কাট কয়লার শহরে পড়তে যাওয়ার নামে পুড়তে, অঙ্গার হতে। ঠিক জানালার পাশে বসে আমি এই সত্য জেনে গিয়েছিলাম। অথচ আমি বস্তুত কোনদিন জজ ব্যারিস্টার হতে চাইনি। হতে চাইনি ডিসি এসপি। প্রায়শ ভাবতাম, আমি লালন সাইয়ের কোন মাজারের ফকির হলে ভালো হতো। আসলে আমি কবি হতে চেয়েছিলাম।
এরপর বহুদিন পরে যখন আমি জেনে গেলাম এই শহর, এই ঢাকা বিশ্রি শহরই নয় শুধু; একইসঙ্গে এটি সংঘবদ্ধ একটি ডাকাতদের আস্থানা। এখানে শুধু আ.লীগ বিএনপি জামাত জাতীয় পার্টি সিপিবি বাসদ ওয়ার্কার্স সার্কাসরাই ডাকাত নয়, এখানে ডিসি এসপি জজ ব্যারিস্টারদের বাইরেও ডাকাতদের সিন্ডিকেট আছে। কবি সাহ্যিতকেরাও এই শহরে এসে ডাকাত হয়ে যায়। ডাকাত রাজ্যের ডাকাত কবি। কিন্তু আমি এরকম হতে চাইনি।
বিশ^বিদ্যালয় পড়তে পড়তে বামপন্থি রাজনীতির সাথে যুক্ত হইনি। এরও আগে যখন আমার ভেতর আরেকটি আমার অস্তিত্ব জন্ম নিচ্ছিলো তখন থেকেই আমি বিপ্লব করতে চেয়েছিলাম। জীবনে দুটি জিনিষই চেয়েছিলাম বিপ্লব ও কবিতা। এই মধ্যবেলায় এসে দেখলাম কোনটিই হয়নি। এ শহরে বিপ্লবতো হয়ই না, কবিতাও নয়।
বিশ^বিদ্যালয়ে বামপন্থি আন্দোলনের কর্মী থেকে কখন নেতা হয়ে গেলাম জানি না। কিন্তু নেতা হওয়ারও বহু আগে একবার মন খারাপের দীর্ঘদিনে বাড়িতে গিয়ে বসেছিলাম। সেইসব সময় অদ্ভুত সব স্বপ্ন দেখতাম। দেখতাম, সারি সারি মানুষ আমাকে ডাকছে। তারা কোথায় যাচ্ছে কেউ জানে না। কিন্তু সেইসব অলিক মানুষের ডাকে আরো মানুষ তাদের পেছনে হাটছে। স্বপ্ন দেখে রাতে আর ঘুমাতে পারতাম না। আমাদের পুরানো ভাঙ্গা রাজবাড়ির সামনের মাঠে বাকি রাত হাটতাম।
এরকমই একদিন সময় সাব্বির মামা এলেন। মামা এ কারণে আমার বন্ধু বাদলের মামা তিনি। পুরুষ মানুষ দেখতে এতো সুন্দর হয় সাব্বির মামাকে না দেখলে বিশ্বাস হোত না। সাব্বির মামা যেনো আমার এই একাকি জীবনে বৈশাখের ঝড় হয়ে এলেন। পেশায় তিনি ডাক্তার। কিন্তু ডাক্তারি করতে তার ভাল লাগে না। তার ভাল লাগে কবিতা নিয়ে আলাপ করতে। লালন নিয়ে কথা বলতে। ভক্তিবাদ আর বস্তুবাদ নিয়ে তিনি ঘন্টার পর ঘন্টা কথা বলে কাটিয়ে দিচ্ছিলেন। মনে হলো সময়গুলো যেনো হাওয়াই মিঠাইয়ের মত চলে যাচ্ছিলো।
আমাকে তিনি বলছিলেন, রাজনীতি আমার জায়গা না। যে ধারার রাজনীতি দেশে চলছে সেটি না করাই ভাল। বরং রাজনীতিতে আরো বেশি মানুষ আসতে পারে, মানুষ তার চিন্তা পদ্ধতিতে প্রশ্ন করা শিখতে পারে তা নিয়ে ভাবো। তুমি লেখো। বেশি বেশি করে লিখো। প্রেম অপ্রেম, যৌনতা, যা মনে আসে। মুক্ত মানুষের আকাঙ্খা যা হয় সেটিই প্রকাশ করো। বিশ^বিদ্যালয়ে ফিরে যাও। লিটল ম্যাগাজিন বের করো। অন্যদের পত্রিকায় লেখো। তুমি লিখে ভাসিয়ে দাও। তোমার লেখার মধ্যে একটা মায়া আছে, একটা যাদু আছে।
আমি তখন সাব্বির মামাকে বিপ্লব না করার অজুহাত হিসেবে এইসব লেখালেখির উপদেশ দিচ্ছেন এটি বলেছিলাম। চারু মজুমদার আর সিরাজ সিকদার থেকে কোট করে বলেছিলাম, এগুলো পাতি বুর্জোয়া মনোভাব। লেখালেখির বদলে বরং আমি সাব্বির মামাকে বলেছিলাম, কিভাবে প্রকাশ্য গণআন্দোলনের সঙ্গে সশস্ত্র সংগ্রামের মেলবন্ধন ঘটাতে হবে। কিভাবে আরবান গেরিলা ওয়ারজোন গড়ে তোলা যাবে। কি ধরনের কর্মসূচী নিলে ছাত্ররা শ্রমিক-কৃষকের সাথে লড়বে। পার্টি বাহিনী ফ্রন্ট কিভাবে কাজ করবে। একদম ছক একে খাতায় চিত্রকর্ম দিয়ে এসব বুঝিয়েছিলাম। সম্ভবত এসব বিষয়ে আমি দুইরাত সাব্বির মামার সাথে আলাপ করেছিলাম।
সেইসব আলাপ হয়েছিলো আমাদের নড়াইয়েলর লোহাগড়ার সেই পুরানো জমিদার বাড়িতে। আমার রুমের বাইরেই ছিলো বিশাল একটা শিউলি ফুল গাছ। মাঝরাতে সেখান থেকে গন্ধ ছুটতো। সাব্বির মামা চলে গেলেন। আমি ফের একা হয়ে পড়লাম। তার কিছুদিন পর ঢাকায় ফিরলাম। আবার আন্দোলন সংগ্রাম। কিন্তু এবার সত্যিই সত্যিই লিটল ম্যাগ বের করার চেষ্টা করেছিলাম। কাদামাটি নামে পত্রিকাটির একটি সংখ্যাও করেছিলাম। পত্রিকা বের হবার পর কোথা থেকে সাব্বির মামা এলেন মধুর ক্যান্টিনে। অনেক গল্প করলেন। বললেন, পত্রিকা করছি এটি ভাল খবর। অনেক উৎসাহ দিলেন। এ ঘটনার বহু পরে জেনেছি সাব্বির মামা হলেন পূর্ববাংলার কমিউনিস্ট পার্টি (এম এল লাল পতাকা) সাধারণ সম্পাদক ডা: মিজানুর রহমান টুটুল। র‌্যাব তাকে ঢাকা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে রাজশাহীতে ক্রসফায়ারে হত্যা করে। আর আমার বন্ধু বাদলেরও কোন খোজ নেই। ও হয়তো অনেক আগেই জমা খরচের খাতায় ওঠে গেছে।
আমিও এখন স্বপ্ন দেখি, প্রায় দেখি। এটি নিয়ে আমি যে পত্রিকায় কাজ করি সেখানে লিখেছিও, দেখি আমাকে মারার জন্য দীর্ঘ এক আরব দৌড়াচ্ছে। তার হাতে রুপালী তলোয়ার চাদের আলোয় পড়ে চকচক করছে। আমি মৃত্যু যন্ত্রনায় ছটফট করি। কিন্তু মরি না।
এর ব্যাখ্যা অনেকে করেছেন, যেহেতু আমি নাস্তিক ব্লগারের তালিকায় একদম প্রথম সারির, সে কারণেই ভাবি আমি নিহত হবো। কিন্তু আমিতো এভাবে ঘাতকের হাতে মরতে পারি না। এটা আমার কবিতার দিব্যি। বহুকাল আগে একবার আমি লিখেছিলাম, ‘আমার দেহ গিলে নিবে কোন ট্রেন অথবা তোমার দেহ’
হয় আত্মহত্যা করবো না হয় ভালোবেসে তীব্র যন্ত্রণায় মরতে চাই। ঘাতকের হাতেতো মরবো না আমি। আমি কেন এ স্বপ্ন দেখি? আর বিশ্বাসী আস্তিকেরা কেন আমায় মারবে? আমিতো কোনদিন আল্লাহ খোদা নবী রাসুল নিয়ে কোন কুটক্তীতো দুরে থাক কোন কথাই লিখিনি। তাহলে আমার নাম কেন এ তালিকায়? আমি নাস্তিক কিনা তা জানি না। কারণ নাস্তিক আস্তিকতার এসব বিষয়গুলো আমার কখনই বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়নি।
নাস্তিকের তালিকায় নাম ওঠায় অনেকের জাত বেড়েছে। অনেকে আবার জীবনের ঝুকি নিয়ে দেশের বাইরে পাড়ি দিয়েছেন। কিন্তু আমি ভাবতাম এখনো ভাবি, আমি এভাবে মারা যাবো না। আমিও বাইরে যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো?
আমিও থাকি মিতালির রোডের মাথায়। ধানমন্ডি ১৫ নম্বর দিয়ে যেতে যেতে পেপার স্টান্ডগুলোতে আমিও চোখ বোলাই। এই গল্প কী তবে আমার? আমিতো লিখি না বহুদিন। শেষ যেবার আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলাম। নানান ঘটনায় সেটি একটা বিমবিষার মত হয়ে দাড়ালো তখন একটা সুইসাইড নোট লিখেছিলাম। সেটি কবির মৃত্যু বিষয়ক ভাবনা হিসেবে আমার পত্রিকার সাহিত্য সম্পাদক মাসুদ ভাই ছেপে দিয়েছিলেন। এই শেষ লেখা। একটা গল্প, কয়েকটা কবিতা আর ছড়িয়ে ছিটিয়ে কিছু লেখা কোথায় কোথায় ছাপা হইছে তার কোন কিছুই আমার কাছে নেই। আমি এসব সংগ্রহে রাখি না। সব মিলিয়ে উপন্যাসের ৪০ পাতা লিখে ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আর বের হয়নি মাথা থেকে। মনে হোত ছাইপাস লিখে কি হবে? তাহলে এই যে উপন্যাস, তা কি আমাকে লক্ষ্য করে? নাকি আমার মত যাদের স্বপ্ন ছিলো কবি হওয়ার, বিপ্লবী হওয়ার বিপ্লব করার কিম্বা জীবনে কিছু একটা করার তাদের সবার গল্প?
এইসব সিদ্ধান্ত না হয় অন্যকোন সময় নিবো। বা নেবারও যে খুব একটা দরকার আছে তা বলছি না। কিন্তু এই উপন্যাস, এই গল্প আমাকে মাতালের মত টেনে নিয়ে গেছে আমার ৩৭ বছরের জীবনে। অনেক কিছু হতে চেয়ে আমি এখন সাংবাদিকতা করি। ক্রমশ দীর্ঘদেহী সাহসী একটা মানুষ পরিণত হয়েছি আরশোলায়। আর কত আপোষ করবো?
এই গল্প আসলে অনেকগুলো স্বপ্ন ক্রসফায়ার হওয়ার গল্প। সরদার মামার ক্রসফায়ারের মধ্য দিয়ে পাঠক সেই স্বপ্নগুলো নাই হয়ে যাওয়ার বিষয় ধরতে পারে। এই গল্পটি বলার জন্য আপনি পাঠককে বসিয়ে রেখেছেন। একটি ঘোর তৈরী করে, একটি চক্রব্যুহো তৈরী পাঠককে সেখানে ফেলে দিয়ে আপনি নিজেও কস্ট পাচ্ছেন। আমি এরকম সক্রিয় লেখক চাই। যিনি পাঠকের সাথেই কস্ট পান।
এই গল্প আমার গল্প, আমাদের মত মানুষের গল্প। এই গল্প আমার চেনা জীবনের গল্প। যৌথখামারগুলো ক্রসফায়ারের গল্প। সারারাত ধরে গল্প পড়ে মাথা এলো মেলো হয়ে আছে। সে কারণে আপনাকে এই এলো মেলো চিঠি লিখলাম। বহুকাল চিঠি লিখি না। চিঠি লেখার মত কেউ আর বেচে নেই। যাদের লিখতাম তারা কেউ ক্রসফায়ারে না হয় নিজেই মরে গেছে।
আমার ফেসবুক অ্যাকাউন্ট নেই, সে কারণেই আপনাকে মেইল দিলাম।
ভাল থাকবেন।
শুভেচ্ছাসহ
আরিফুজ্জামান তুহিন

রাফসান গালিব

প্রিয় কথাশিল্পী মাহবুব মোর্শেদ ভাইয়ের উপন্যাস -তোমারে চিনি না আমি। দীর্ঘদিন পর মাহবুব ভাইয়ের উপন্যাস পাইল পাঠক।
ঢাকাতে এসে তার হাত ধরে সাংবাদিকতায় যাত্রা। আগ থেকেই চিনতাম এ অমায়িক ভদ্রলোকরে। সাংবাদিক হিসেবে চিনতাম না, পরে তো তারে বস হিসেবেই পাইলাম। নতুন পাণ্ডুলিপি হাজিরানায় অভিনন্দন তারে।
এই অসাধারণ ঊপন্যাসিকের বইখানা আমি নিতেছি মেলা থেকে, আপনিও নিতে ভুইলেন না।
প্রকাশক আদর্শ। স্টল ৩২৬, ৩২৭, ৩২৮।

তোমারে চিনি না আমি নিয়ে সব খবরের লিঙ্ক

সাখাওয়াত টিপু

গত কয়েক দিন ধরে ম্যাক্সিম গোর্কির নানা প্রবন্ধ পড়ছিলাম। পড়তে পড়তে মনে হল, গোর্কি রাজনৈতিক দর্শনের বেলায় খুব অস্থির প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। কিন্তু মৌলিক সৃষ্টিশীলতায় দার্ঢ্য মননের। আরো মনে হলো, আমি প্রবন্ধ যত দ্রুত পড়তে পারি, কবিতা/গল্প/ উপন্যাস তত দ্রুত পড়তে পারি না। ফলে সময় লাগে। সময় দিয়ে পড়া লাগে। ম্যাক্সিম গোর্কির শেষকৃত্যের একটা ছবি মাথা থেকে কোন ভাবে ফেলতে পারছি না ক'দিন ধরে।। সেটা হলো- গোর্কির কফিন বহন করছিলেন সেই দেশের রাষ্ট্র প্রধান জোসেফ স্তালিন। দুনিয়ায় এমন সৌভাগ্যবান লেখক নেই বললেই চলে, যাদের কফিন খোদ রাষ্ট্র প্রধান বহন করেছেন।

সম্প্রতি বাংলাদেশি লেখকদের ৩ খানা বই উল্টিয়ে দেখার সুযোগ হয়েছিল। বই ৩টি হলো আবদুল করিম/ মুহাম্মদ এনামুল হকের ' আরাকান রাজসভার বাঙ্গালা সাহিত্য', নূরুল কবীরের 'কথকতা' ও মাহবুব মোর্শেদের ' তোমাকে চিনি না আমি'। প্রথম বইটি ঐতিহাসিক। নানা কারণেই। কারণ সপ্তদশ শতাব্দীতে আরাকানে মুসলমানের হাতে বাংলা সাহিত্যের বিকাশ হয়। মজার ব্যাপার হলো- আরাকানী সাহিত্যের ধরন বৈষ্ণব সাহিত্যের ন্যায়। পদাবলীর মতো পদ-বিন্যাস, সহজ ভাব আর গীতলতার লালিত্যে ভরা। বইটি দৌলত কাজী থেকে দোনা গাজীর একটা সজল রূপ। বইটি পড়ে আনন্দ পেয়েছি বেশ।

চিন্তাবিৎ নূরুল কবীর আমার পছন্দের মানুষ। স্পষ্টভাষী বলে ওনার খ্যাতি বিস্তর। যাক সে কথা! কবীর ভাই 'কথকতা' বইটা উপহার দিয়েছেন। এটি বিভিন্ন সময় নানাজনকে দেয়া সাক্ষাৎকারের একটা সংকলন। মূলত সাক্ষাৎকারে তিনটি বিষয় নিয়ে কথা বলেছেন। যথা- মুক্তিযুদ্ধ, গণতন্ত্র ও বুদ্ধিজীবীতা। স্বাধীন রাষ্ট্র জন্মাবার পর আমাদের দেশে বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ খুব বেশি হয়েছে বলে মনে হয় না। স্বাধীন দেশে বুদ্ধিজীবীতার দিশা সাহিত্যিক/অধ্যাপক/ সাংবাদিকরাই দিয়েছেন। কিন্তু আস্তে আস্তে সেটা চলে যায় আমলাতন্ত্র আর এনজিও কর্মকর্তাদের হাতে। সে এক দুখুমাখানো সুশীল সংবাদ! সেটা অন্যকথা! কিন্তু নূরুল কবীরের বইটা নিয়ে কোথাও কোন আলোচলা-সমালোচনা দেখলাম না। নীরবতা দিয়ে জ্ঞানকে কখনো ঢেকে রাখা যায় না। এটা নিশ্চয়ই বুঝদাররা বুঝবেন।

মাহবুব মোর্শেদ আমার অনুজ-বন্ধু। সেদিন আমাদের আরেক বন্ধু বললেন, মাহবুব আপনাকে নিয়ে এমন সমালোচনা করেছেন, তারপরও দেখি আপনি তাকে পছন্দ করেন! বললাম, সাহিত্যের আনন্দটা নেন। সাহিত্য সাহিত্যই। তার দ্বিতীয় উপন্যাস 'তোমারে চিনি না আমি' প্রকাশিত হয়েছে। বইটাও মাহবুব উপহার দিয়েছে। দ্বিতীয় উপন্যাসে সে খানিক ফেলে আসা দিনগুলোতে থিতু হয়েছে। উপন্যাসে আছে নায়কের স্বপ্ন আর বাস্তবের ফারাক। মূলত আড়ালের এক রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা। সেটা একটা সময়কালের। আর বেশি বলব না। তার ভাষা সহজ, সরল নয়। যা ভাবকে ধারণ করতে পারে। আনন্দদায়ক ব্যাপার।
সবাইকে শুভেচ্ছা।
#সাখাওয়াত_টিপু
ইন্দিরা রোড, ঢাকা
ফেসবুক 

কামরুজ্জামান কামু

এই বইটা নাকি রকমারি থেকে খুব বিক্রি হচ্ছে। শুনে আমি উৎসাহী হয়ে বইটা বাসায় নিয়ে আসছি। বেশ কয়েক বছর আগে মাহবুব মোর্শেদ-এর প্রথম উপন্যাস 'ফেস বাই ফেস' পড়ে মুগ্ধ হইছিলাম। সে সময় ইন্টারনেট এতো বিস্তার লাভ করে নাই। সমাজ, রাজনীতি, জীবন ও সম্পর্কের সপ্রতিভ, রসাত্মক ও সংবেদনশীল ভাষ্য রচনার শক্তি তাঁর আছে। আছে সহজ ভাষায় অন্তরলোক উন্মোচনের ক্ষমতা। পড়তে শুরু করলে পাঠককে ধরে রাখার দায়িত্ব নিয়ে নেয় তাঁর গতিময় ভাষা। এই লোকের সাহিত্য যদি বাজারে বেস্টসেলার হয়, তাহলে বলতে হবে পাঠক সমাজ কিঞ্চিৎ দুষ্টু হইয়া উঠতেছেন। জয় হো মামো! বাকিটা পইড়া লই।

কৃতজ্ঞতা : মাহবুব মোর্শেদ


'তোমারে চিনি না আমি' উপন্যাসের প্রথম খসড়া তৈরি করে রাজশাহী যেতে হয়েছিল। কাহিনির বড় একটা অংশ রাজশাহীতে বিশেষত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটেছে। পুরনো জায়গাগুলো নতুন করে দেখার প্রয়োজন হয়ে পড়েছিল। কিন্তু কেউই বিশ্বাস করতে পারছিলেন না কথাটা।
একি সিনেমা নাকি যে স্পট দেখতে যেতে হবে। জিজ্ঞেস করছিল রাজশাহীতে আসলে কী কাজ। মজার ব্যাপার, রাজশাহীর বন্ধুরা কথাটা বিশ্বাস করলেন। Salim Reza Newton, Ullash Habib Zakaria, সৈকত আরেফিন, রহমান রাজু দারুণ সহযোগিতা করলেন। যা যা মেলানোর দরকার ছিল তা তা ঠিকঠাক মেলাতে পারলাম। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শীতের আগমনী দিনগুলো সত্যি দারুণ ছিল। আহা বসন্তেও যদি যাওয়া যেত। কথা হয়েছে Nusrat Sharmin, Mahbuba Chhaya, স্মৃতি রুমানা, A-Al Mamun এর সাথে।
কৃতজ্ঞতা স্বীকার করাই হয়নি। কবি জুয়েল মুস্তাফিজও অনেক সহযোগিতা করেছেন। সবাইকে ধন্যবাদ। পরের উপন্যাসের কাজ তো আগেই শুরু করেছি। বন্ধুরা পাশে না থাকলে লেখা সবসময়ই কঠিন।

Sadikur Rahman

“Tomary Chini Na Ami” is now in my hand. The novel by Mahbub Morshed keeps me waiting for last 10 days. I was very much eager to get it in very first day of its publication but was not able to visit Book Fair. So I have to take alternative route –Rokomai.com. I placed a preorder to Rokomari on February 1 and they delivered it to me today after repeated push.
Special thanks to Mahbub vai for giving us a novel after a long (readers aspect) interval and expecting more in coming days with reduced break.
Thanks Rakomari.com.